ধর্মতলায় লাঠিচার্জের পর জুতো নেওয়ার ভিড়। ছবি - টুইটারের ভিডিও থেকে নেওয়া |
নিজস্ব প্রতিবেদন: এ যেন জুতা আবিষ্কার। ধর্মতলায় (Dharmatala) আইএসএফের (ISF) সভায় পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জে (Lathicharge) যে যেদিক পেরেছেন ছুটেছেন। তার পর ধর্মতলা চত্বর জুড়ে শুধুই জুতো, চটি। পরিস্থিতি একটু শান্ত হতেই জুতো নিতে ভিড়। কে আইএসএফ কর্মী, আর কে পথচলতি মানুষ বোঝা দায়।
শনিবার ধর্মতলায় আইএসএফ-এর প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে জমায়েত ছিল ধর্মতলায়। দলের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির নেতৃত্বে জড়ো হন প্রচুর সমর্থক। দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বারবার অবরোধ তুলতে বললেও কাজ না হওয়ায় শেষে বেধড়ক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। আইএসএফ কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটানো হয়। এই জোড়া ‘অস্ত্র’-এর মুখে পড়ে পিছু হঠেন আইএস সমর্থকরা। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই শুর হয় পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়া।
আরও পড়ুন: ISF এর বিক্ষোভে ধর্মতলায় ধুন্ধুমার, লাঠি-গ্যাসে অগ্নিগর্ভ | গ্রেফতার নওশাদ, আহত ১৭ পুলিস
তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই এলাকা শান্ত হতেই দেখা যায় গোটা চত্বর জুড়ে শয়ে শয়ে জুতো। আচমকা লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস থেকে বাঁচতে পালানোর সময় আইএসএফ কর্মীদের জুতো খুলে যায়। তার জেরে কার্যত জুতোর পাহাড় তৈরি হয়। কিছুক্ষণ পরে দেখা যায়, পুলিশকর্মীরাই জুতোগুলি এক জায়গায় ডাঁই করে রেখেছেন। সেও কার্যত জুতোর পাহাড়।
কিন্তু আসল ছবিটা ক্যামেরাবন্দি হয় তারও কিছুক্ষণ পরে। পুরো পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হওয়ার পর অনেকেই আসেন জুতো নিতে। তখনই দেখা যায় অনেকেই জুতো আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন। অর্থাৎ নিজের জুতো। হাজারো জুতোর ভিড়ে নিজের জুতো খুঁজে পাওয়া কার্যত গন্ধমাদন পর্বতে বিশল্যকরণী খোঁজার মতো। তার উপর আবার দুই পাটি মেলানো, সে তো কার্যত অসাধ্যসাধন। তবু অনেকে চেষ্টা করছিলেন।
আরও পড়ুন: ফের অস্বস্তি বাড়ল শাসকের, নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ
কিন্তু একি! এদের তো অধিকাংশেরই পায়ে জুতো রয়েছে। তাহলে? কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা জিজ্ঞাসা করতেই পর্দাফাঁস। সবাই আমতা আমতা করছেন। পুলিশ জিজ্ঞেস করছে, জুতো নিতে এসেছেন? আপনি কি মিছিলে এসেছিলেন? জবাবে হ্যাঁ বা না যেটাই বলুন বিপদে। কারণ সভায় যোগ দিতে এসেছেন বললে গ্রেফতার করতে পারে পুলিশ। আবার না বললেও বিপদ! কারণ, যদি সভায় না-ই এসে থাকেন, তাহলে জুতো নিতে এসেছেন কেন? ফলে অধিকাংশই নিরুত্তর থেকে জুতো খোঁজার এবং এক পাটির সঙ্গে আরেক পাটির সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
Courtesy #ISF this is how #Kolkata looks now. common people terrified, traffic movement stalled as bricks and bottles came flying. Police fired tear gas shells, used lathi to push the crowd away. But never mind, even after running amock they came back to collect their slippers. pic.twitter.com/XaJFzf0kq5
— Tamal Saha (@Tamal0401) January 21, 2023
পুলিশকর্মীদের একাংশ মনে করছেন, আইএসএফ কর্মীরা হয়তো জুতো নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু তার সঙ্গে জুতো নিতে এসেছিলেন স্থানীয় এবং পথচলতি কিছু সুযোগসন্ধানী মানুষও। এই হাজারো জুতোর ভিড়ে এক জোড়া জুতো যদি বাগিয়ে নেওয়া যায় এই আশায় অনেকেই জড়ো হয়েছিলেন।