স্কুল সার্ভিস কমিশনের (Schoot Service Commission) ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা একটি OMR শিট। |
২০১৬ সালে স্কুলে মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নপত্রে গ্রুপ ডি নিয়োগের পরীক্ষা নেয় রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশন। পরীক্ষার্থীরা সেই উত্তর দেন ওএমআর শিটে। পরীক্ষার পর স্কুলগুলিতে নিয়োগ পান ৪৪৮৭ জন। হাইকোর্টের নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে শিক্ষক নিয়োগের মতোই গ্রুপ ডি নিয়োগেও ব্যাপক কারচুপির হদিশ পায় সিবিআই। গাজিয়াবাদের একটি সংস্থা থেকে ওএমআর শিটের আসল কপি উদ্ধার করে সিবিআই। তাতে দেখা যায়, বহু প্রার্থী শূন্য, এক, দুই, তিন- এমন নম্বর পেয়েও চাকরি পেয়েছেন। এমনকি, সাদা ওএমআর শিট জমা দিয়েও চাকরি পান বহু প্রার্থী।
এই তথ্য সামনে আসতেই চাকরি পাওয়া সব প্রার্থীর ওএমআর শিট প্রকাশ করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। একই নির্দেশ দেন বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসুও। সেই নির্দেশ মতোই এ দিন সব প্রার্থীর ওএমআর শিট প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। ফলে যে কেউ কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে এই প্রার্থীদের ওএমআর শিট দেখতে পারেন।
আরও পড়ুন : ফেসবুকে প্রেম, সুইডেন থেকে উড়ে এসে উত্তরপ্রদেশের যুবককে বিয়ে সুইডিশ কন্যার
সিবিআই আগেই আদালতে জানিয়েছিল, মোট ৪৪৮৭ জনের নিয়োগের সুপারিশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। তার মধ্যে ২৮২৮ জনের ক্ষেত্রে কোথাও না কোথাও দুর্নীতি হয়েছে। এদের ওএমআর শিট বিকৃত করা হয়েছে। বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্রাপ্ত নম্বর। গাজিয়াবাদের ওই সংস্থার কাছ থেকে আসল ওএমআর শিট, অর্থাত্ পরীক্ষার্থীরা যে শিটে পরীক্ষার উত্তর ভর্তি করেছিলেন, তার আসল কপি উদ্ধারের পরই এই তথ্য পায় সিবিআই। আদালতে সেই তথ্য জমা দেওয়ার পরই এই তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
আর এই তালিকা প্রকাশের পরই শিক্ষামহলেও শুরু হয়েছে গুঞ্জন। পরীক্ষায় আসল ওএমআর শিটে কে কত নম্বর পেয়েছেন, তা দেখতে অনেকেই ওয়েবাইটে ঢুকেছেন। পাশাপাশি কে দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছেন, উঠে আসছে সেই সব আলোচনাও।
এর আগে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশেই ১৮৩ জন শিক্ষকের তালিকা আগেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। ওই শিক্ষকরা দুর্নীতি বা জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন বলে তদন্তে জানায় সিবিআই। ওই শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে আর সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বসতে না পারেন, তেমন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এবার এই গ্রুপ ডি-র তালিকায় যাঁরা দুর্নীতি করে বা ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কী নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, তার দিকে নজর থাকবে শিক্ষামহলের।