মঞ্চে প্রখ্যাত কথক শিল্পী সায়নী চাওড়া ও নবীন কথক শিল্পী টুসি নস্কর। |
নিজস্ব প্রতিবেদন: এ বছর বাংলার নতুন বছর শুরুর আগেই নববর্ষের ছোঁয়া মিলল লখনৌতে। গত ১৩ই এপ্রিল, চৈত্র শেষের বিকেলে লখনউয়ের বাল্মীকি রঙ্গশালা, সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি অডিটোরিয়ামের সামনে ধরা পড়ল এক টুকরো বাংলা। এই প্রথম লখনউয়ের বুকে ধ্রুপদী লয়ে উদযাপিত হল 'উত্তরী ধ্রুব'। ক্লাসিক্যাল নাচ ও গানে যেন বৈশাখকে সাদরে বরণ করল যোগী রাজ্য।
কলকাতার সন্তোষপুরের আগন্তুকের আয়োজনে বাংলার সংস্কৃতির আবেশে মজলেন লখনউয়ের সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ। শুধু বাংলার সংস্কৃতি নয়, মিলেমিশে একাকার হল লখনউ ঘরানা, জয়পুর ঘরানাও। কলকাতার কত্থক শিল্পী তথা পিয়ার এডুকেটর ও ডান্স থেরাপিস্ট টুসি নস্করের মাথায় আসে লখনউয়ে বাংলার নববর্ষ পালনের ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের ভাবনা। এই অভিনব ভাবনার রূপায়ণ ঘটায় সন্তোষপুর আগন্তুক। সঙ্গী হন লখনৌর শিল্পী মহল।
প্রখ্যাত নৃত্য শিল্পী এমিলি ঘোষ কাজের সুত্রে লখনউয়ে থাকায়, তিনি সুচারুভাবে আয়োজন করেন সমগ্র বিষয়টি। সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় কলকাতা যে ধ্রুপদী চর্চার পীঠস্থান, তা আরও একবার প্রমাণ হল যোগী রাজ্যে। এদিন সঙ্গীত নাটক একাডেমির মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করেন কলকাতার শিল্পী দীপান্বিতা গাঙ্গুলি, সরোদ পরিবেশন করেন সিরাজ আলি খান। কথক পরিবেশন করেন রাজীব রঞ্জন প্রমুখ। তবে যাঁর ভাবনা থেকে ভিনরাজ্যে বাংলার নববর্ষ পালন, সেই টুসি নস্করের একক নৃত্যে উঠে এসেছে ভারতীয় সংস্কৃতির চিরাচরিত ঐতিহ্য ও ভক্তিরস।
মঞ্চে বোল পরন্তে ছিলেন লখনউ ঘরানার ন্যাশনাল স্কলার কলকাতার প্রখ্যাত কথক শিল্পী সায়নী চাওড়া। বিশেষ অতিথি উত্তরপ্রদেশের চিফ মেডিক্যাল অফিসার অমরেন্দ্র কুমার বলেন, "এই অভিনব উদ্যোগ নিশ্চিতভাবেই আমাদের একসূত্রে বাঁধবে। এই ধরনের ভাবনাকে সাধুবাদ। খুব ভাল কাজ হল।"
পন্ডিত রামমোহন মহারাজ বলেন, "এখানে বাংলার নববর্ষ পালনের এই উদ্যোগ পথ প্রদর্শক হিসাবে থেকে যাবে। নবীন কথক শিল্পী টুসি নস্করের এই উদ্যোগকে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাতে বিভেদ কমবে।" আয়োজক সন্তোষপুর আগন্তুকের সম্পাদক অরিজিৎ মুখার্জি বলেন, "মেলবন্ধনের পাশাপাশি আমাদের সংস্কৃতির পরম্পরা ধরে রাখতে আরও যত্নশীল হতে হবে আমাদের। বাংলার নববর্ষ ধ্রুব হোক।"